মধুতে থাকা প্রাকৃতিক শর্করা,গ্লুকোজ সহজেই শরীরের ক্লান্তি দুর করে। ইউমিন সিস্টেমকে শক্তিশালী করে। মধুতে এন্টিঅক্সিডেন্ট ও এন্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান থাকায় মানব দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। মধুর গুরুত্ব ও বিভিন্ন উপকারিতা সম্পর্কে জানবো আজ.
মধু গলা ব্যাথা ও কাশি নিরাময়ে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। যদি কিনা কারো শুকনা কাশি হয় সেক্ষেত্রে তুলসী পাতার রস ও মধু খেলে কাশি থেকে আরোগ্য লাভ করতে পারে। এছাড়াও মধু হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়,ডায়াবেটিস ও ওজন নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রেই খুবই কার্যকরী।
রাতের বেলা মধু খেয়ে ঘুমালে মস্তিষ্কের সেরোটেনিন নিঃসরণ বৃদ্ধি হয় যা কিনা ঘুমের জন্য উপকারী। মধু পাকস্থলীর উন্নতি ঘটায় হজম শক্তিতে সাহায্য করে, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। এমনকি মধুতে থাকা এন্টিসেপটিক ক্ষত ও পোড়া স্থান শুকাতে সাহায্য করে।
রূপচর্চা ও বিউটি টিপসে মধুর ব্যবহার:
চুল ও ত্বকের যত্নে মধু খুবই উপকারী। এটি ত্বক মসৃণ, লাবণ্যতা বৃদ্ধি ও খুসকি প্রতিরোধে সাহায্য করে।
মধু দিয়ে বিভিন্ন রেসিপি :
মধু ওষুধি গুণের পাশাপাশি এটি দিয়ে বিভিন্ন ধরনের রেসিপি তৈরিতে সহায়ক। মধু দিয়ে যেসব রেসিপি বানানো হয় তা হচ্ছে, হানি প্যানকেক, হানি লেমন সালাদ ড্রেসিং, হানি গার্লিক চিকেন, হানি কাস্টার্ড, হানি বারবিকিউ সস,হানি ইয়োগার্ট ডেজার্ট, হানি লেমন ওয়াটার ড্রিংকস, হানি টোস্ট, হানি বিস্কুট, হানি মিল্ক শেক, হানি কাস্টার্ড, হানি গার্লিক চিকেন।
খাঁটি মধু ও ভেজাল মধু চেনার উপায় :
এক গ্লাস পানিতে এক চামচ মধু দিন যদি কিনা নিচে জমা হয়ে দ্রবীভূত না হয় তাহলে বুঝবেন খাঁটি মধু আর যদি পানিতে ছড়িয়ে যায় তাহলে সেটি ভেজাল মধু। এক টুকরা সাদা কাগজে নিয়ে দেখতে পারেন পানির ছোপ পড়ে কিনা। যদি কিনা পানি ও চিনি মেশানো থাকে তাহলে কাগজ চারিদিকে ভিজে যাবে। হাতের আঙ্গুলে নিয়ে দেখতে পারেন যে,চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে কিনা,চারিদিকে ছড়িয়ে পড়লে সহজেই ভেজাল মধু বুঝা যাবে।
এমনকি যদি মধুতে ভেজাল থাকে তাহলে চুলে হালকা চুলে লাগালে গিটে যাবে আর খাঁটি মধু চুলে লাগালে গিটবে না। খাঁটি মধুতে অন্যরকম সুগন্ধি ও স্বাদ পাওয়া যায়। মধুতে ভিনেগার মিশিয়েও পরীক্ষা করে দেখা যেতে পারে যে, ফেনা ওঠে কিনা, যদি ফেনা ওঠে তাহলে সেটি ভেজাল মধু। পরিষ্কার সাদা কাপড়ে মধু ফেলেও দেখা যেতে পারে যদি কিনা ধোয়ার পর দাগ থেকে যায় তাহলে বুঝতে হবে ভেজাল। এমনকি ভেজাল মধু ডিপ ফ্রিজে রাখলে জমে বরফ হয়ে যাবে।
এছাড়াও ল্যাব টেস্টেও পরীক্ষা করে দেখা যেতে পারে যে,সত্যিকারের খাঁটি মধু কিনা।
ইসলামে মধুর গুরুত্ব :
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা কুরআনের একটি বিশেষ সূরায় মধুর কথা উল্লেখ করেছেন- “আর তোমার প্রতিপালক মৌমাছিকে নির্দেশ দিয়েছেন: পাহাড়ে, গাছে এবং মানুষ যা উঁচু করে বানায়, সেখানে তুমি বাসা তৈরি কর। অতঃপর সব ফল থেকে খাও এবং তোমার প্রতিপালকের পথ সহজ করে অনুসরণ কর। তাদের পেট থেকে এক প্রকার পানীয় বের হয়, যার রঙ বিভিন্ন ধরনের। এতে মানুষের জন্য রয়েছে আরোগ্য। নিশ্চয়ই এতে চিন্তাশীল লোকদের জন্য নিদর্শন রয়েছে।”সূরা নাহল (১৬:৬৮-৬৯):
এই আয়াতে মধুকে “আরোগ্য” বলা হয়েছে – যা মানব জাতির জন্য উপকারী।
এক ব্যক্তি নবী করিম (সা.)-এর কাছে এসে বলল, আমার ভাইয়ের পেটের সমস্যা হয়েছে। তখন তিনি বললেন, তোমার ভাইকে মধু পান করাও।”
হাদীস: বুখারী ৫৬৮৪, মুসলিম ২২১৭
বিঃদ্রঃ মধু গরমে ও অতিমাত্রায় খেলে ক্ষতির সম্ভাবনা আছে এজন্য সতর্কতার সাথে পরিমিত অনুযায়ী খেতে হবে।
মধু অর্ডার করতে ক্লিক করুন